অর্ক,
আজ এ ভোরের স্নিগ্ধ হাওয়ায় আছ কেমন?
ইলশেগুঁড়ির কণার বারি ঝরছে যেমন,
ঈর্ষা দেখো ধেয়ে এসেই ঘিরল এ মন।

উচ্ছিষ্টে থাকাই আমার কপাল বোধহয়,
'ঊর্বশী' সে নামটা আমার আর যেন নয়,
ঋণী করে রেখেছি তোমায়, শোধ যেন হয়।

একুশ বছর ছিল বয়েস শুরুতে সেই
ঐ সময়েই আবেগগুলো ছড়িয়ে দেই
ওসব কথা এ সময়ে ভাবতে তো নেই।

ঔষধের ওই কৌটোয় শুধু ঘুমের বড়ি।

কথায় কথায় বলেছিলে, 'ভালোবাসি',
খইয়ের মতই ফুটেছিল মুখে হাসি।
গাছের সাথে কথা বলার মত করেই
ঘরের মাঝে হত কথা আপন মনেই।

রঙ মেখে তাই সঙ সেজেছি দেখাতে তোমায়,
চশমাটা সেই দু'চোখ থেকে নামিয়ে তাকাই।
ছোট ছোট সেই দু'চোখ আজ অশ্রুসাগর
জোয়ার আছে নেই যে ভাটা, ভয়াল সাগর।

ঝকঝকে সেই সোনালি রোদের সকালগুলো,
মিঞাবাড়ির উঠোনে ছড়ানো মায়াগুলো।
টনক নড়ে ওঠার মতই অনুভবে
ঠোঁটটা কাঁপত, ভাবত তোমায় ছোঁবে কবে?

ডিমের সাদা অংশটুকুর কাজটা যেমন
ঢেকে রেখে হলুদ কুসুম পরম মায়ায়,
রণে ভঙ্গ দেয়া তোমায় আমিও এমন
তীব্রভাবে আগলে নিতাম আমার ছায়ায়।

থাকুক, সেসব বলে এখন হবে কী আর!
দুখের কথা বুকেই লুকোই, করব কী আর!
ধুঁকে ধুঁকে মরে যদি যেত সবে,
নতুন করে দেখতে ক'জন স্বপ্ন, বাঁচার।

পারোও তুমি, পেরেছিলে সেদিনটাতেও
ফাগুন হাওয়ার মুগ্ধতাতেই ভরছিল মন,
বড়ই বুকের পাটা তুমি দেখাবে, তাতেও
ভয়েই ভীত হয়েছিলে সারাটি ক্ষণ।

মুখের কথায় সুখের প্রলাপ বকেছিলে,
যখন কান্না আমায় ঘিরে ধরেছিল,
রসের কথায় রসিক তুমি বনেছিলে
লতার পরশ দুঃখ হয়েই আঁকড়ে নিল।

শামুক ভাঙা দু'টো পায়ের তলে বিঁধে
পুষি মনের মাঝে আমি গাঢ় বিষাদ,
সকল কাঁটায় মিটুক আমার বিষাদ খিদে
হঠাৎ যেন ভাঙুক আমার কষ্টেরই বাঁধ।

বাড়ির গিয়ে আমায় যখন পাবে না খুঁজে,
গাঢ় ছায়ার গাছের তলেই আমায় পাবে,
ভয় করে, তাই বিষটা মুখে নিই না গুঁজে
সৎ থাকাটা নিজের কাছেই মূল্য পাবে।

হুংকার তাই ছাড়ি না আমি, লুকিয়ে থাকি,
দুঃখবাদী না হয়েও সেই বিষাদই মাখি।

চাঁদের আলোয় দেখি থেমে থাকা ঘড়ি।


Post a Comment

Previous Post Next Post