রুমা, 
কেমন ছিলে সেই দশম শ্রেণিতে পড়াকালীন? বেশ ছিলে দেখতে। খুবই ভদ্র এবং সভ্য গোছের। ঠিক আমার মতই বোধহয়।
আমি চোখ তুলে তাকাতাম না তোমার দিকে। আমি সবসময়ই মাথাটা নিচু করে 'জাবেদা', 'খতিয়ান', 'রেওয়ামিল' ও 'চূড়ান্ত হিসাব' -এর হিসাবগুলো মেলাতাম। তুমি আর আমি একই স্কুলেই পড়তাম। তবে স্কুলে আমাদের পরিচয় গড়ে ওঠেনি। বরং এটি গড়ে ওঠেছিল রায়হান ভাইয়ার বাসায়, যাঁর কাছে আমি নবম শ্রেণি হতে এবং এর এক বছর পর তুমিও পড়তে যেতে শুরু করেছিলে।
কেমন ছিলে সেই দশম শ্রেণিতে পড়াকালীন? বেশ ছিলে দেখতে। খুবই ভদ্র এবং সভ্য গোছের। ঠিক আমার মতই বোধহয়।
আমি চোখ তুলে তাকাতাম না তোমার দিকে। আমি সবসময়ই মাথাটা নিচু করে 'জাবেদা', 'খতিয়ান', 'রেওয়ামিল' ও 'চূড়ান্ত হিসাব' -এর হিসাবগুলো মেলাতাম। তুমি আর আমি একই স্কুলেই পড়তাম। তবে স্কুলে আমাদের পরিচয় গড়ে ওঠেনি। বরং এটি গড়ে ওঠেছিল রায়হান ভাইয়ার বাসায়, যাঁর কাছে আমি নবম শ্রেণি হতে এবং এর এক বছর পর তুমিও পড়তে যেতে শুরু করেছিলে।
রায়হান ভাই স্কুলের ছাত্রছাত্রী বলতে শুধু আমাদের দু'জনকেই পড়াতেন। তাঁর সিংহভাগ ছাত্রছাত্রী ছিল ইন্টারমিডিয়েট পর্যায়ের। সেই বড় ভাই-বোনদের মাঝে আমি এতটুকু একটা ছেলে, প্রায়ই ক্লাসগুলো করতাম একা একাই। কারণ, মাথায় উড়না দিয়ে ঘোমটা চেপে, কাঁধে লম্বা ব্যাগ ঝুলিয়ে তুমি খুব কমই ভাইয়ার ক্লাসগুলোতে উপস্থিত হতে। 
তবে তোমার আসা-না আসায় আমার তেমন কিছু এসে-যেত না। আমি তো তোমার দিকে চোখ তুলেই তাকাতাম না। কথা বলা তো দূরের কথা।
কোনো প্রয়োজনেও কথা বলার প্রয়োজন পড়েনি। যে কোনো কিছুর প্রয়োজনে আমি রায়হান ভাইয়ার কাছেই হাতটা পাততাম। তিনিই আমাকে আমার প্রয়োজনের কলম, রুলার, পেন্সিল, শার্পনার হাতে হাতে তুলে দিতেন।
পরীক্ষা নেয়ার সময়টায় তোমার প্রয়োজন স্বাভাবিকের তুলনায় বেড়ে যেত। সহপাঠী হিসেবে যে আমিই ছিলাম, সেই আমিই পরীক্ষাকালীন দেখাদেখির কাজটাকে দু'চোখে দেখতে পেতাম না। তাই আমার পক্ষ থেকে সহযোগিতার হাতটার স্পর্শ তুমি পাওনি।
তবে তোমার আসা-না আসায় আমার তেমন কিছু এসে-যেত না। আমি তো তোমার দিকে চোখ তুলেই তাকাতাম না। কথা বলা তো দূরের কথা।
কোনো প্রয়োজনেও কথা বলার প্রয়োজন পড়েনি। যে কোনো কিছুর প্রয়োজনে আমি রায়হান ভাইয়ার কাছেই হাতটা পাততাম। তিনিই আমাকে আমার প্রয়োজনের কলম, রুলার, পেন্সিল, শার্পনার হাতে হাতে তুলে দিতেন।
পরীক্ষা নেয়ার সময়টায় তোমার প্রয়োজন স্বাভাবিকের তুলনায় বেড়ে যেত। সহপাঠী হিসেবে যে আমিই ছিলাম, সেই আমিই পরীক্ষাকালীন দেখাদেখির কাজটাকে দু'চোখে দেখতে পেতাম না। তাই আমার পক্ষ থেকে সহযোগিতার হাতটার স্পর্শ তুমি পাওনি।
সরাসরি চোখ তুলে না তাকালেও আড়চোখে- প্রতিটা কিশোরের মত করেই আমি তোমার দিকে তাকাতাম। তোমার রূপের বর্ণনা বিস্তারিত বলবো না। আমি চাই না, এই আমার মস্তিষ্ক ছাড়া অন্য কারো মস্তিষ্ক তোমাকে কল্পনা করে তোমার প্রেমে পড়ে যাক। যদিও আসলে তেমন কেউ প্রেমে পড়বে না। কারণ, তুমি দেখতে প্রেমে পড়ার মত কেউ ছিলে না। স্বাভাবিকই ছিলে। আর দশটা বাঙালি মেয়ের মতই। এটা বলাতে আবার মনে করে বোসো না যে আমি তোমাকে নিচু করেছি। স্বভাবে আমি তেমন নই। সুন্দরী মেয়েরা আমাকে বিকর্ষণ করে। আমার কাছে মনে হয়, সুন্দরীরা বেশ অহংকারী হয়। তাদের সৌন্দর্য্যই তাদেরকে অহংকারী করে তোলে।
যাক ওসব কথা। তুমি সুন্দরী ছিলে না, এবং সে যুক্তিতে অহংকারীও ছিলে না।
যাক ওসব কথা। তুমি সুন্দরী ছিলে না, এবং সে যুক্তিতে অহংকারীও ছিলে না।
যতই সময় যাচ্ছিল, আমি একটু একটু করে উপলব্ধি করতে পাচ্ছিলাম তোমার প্রতি আমার দুর্বল হয়ে যাওয়ার প্রবণতাটুকুকে। তুমি যেদিন আসতে না, সেদিন অস্থির হয়ে থাকতাম রায়হান ভাইয়ার ক্লাসে। তবে ভাগ্য ভালো, সেই অস্থিরতা চেপে রাখতাম। স্বভাবে অন্তর্মুখী এই আমি একা একা থাকতে বেশ স্বাচ্ছন্দ্যবোধই করতাম সে সময়ে। তাই অস্থিরতা চেপে রাখতে তেমন বেগ পেতে হত না।
একদিন রায়হান ভাইয়ার ক্লাস ছুটি হলো। কিন্তু সেদিন লোডশেডিং -এর কারণে পুরো এলাকা ডুবে ছিল আঁধারে। রায়হান ভাইয়া আমাকে বললেন, "তানসীর, তুমি তো বাসায় যাবে। রুমাকে কি একটু এগিয়ে দিবে?" আমি তখন একটু ধাক্কার মত খেলাম। আমি একা একা হাঁটতে পছন্দ করতাম, এবং মেয়েদের সাথে ছিলাম না সহজ। তাই তোমাকে এগিয়ে নেয়ার প্রস্তাবে আমি বিব্রত হলাম, স্বাভাবিকতার পথ ধরেই।
সেদিনও আমি একা ফিরেছিলাম বাসায়।
সেদিনও আমি একা ফিরেছিলাম বাসায়।
সেদিনের এরূপ প্রত্যাখ্যানে আমার হয়ত লজ্জিত হওয়া উচিত ছিল। তবে আমি লজ্জিত হইনি। এবং এখনও লজ্জিত হই না সেদিনের কথা ভেবে। সেদিনের সেই 'আমি', আর আজকের এই 'আমি'র মাঝে প্রচুর পার্থক্য থাকলেও এরূপ চিন্তাভাবনার পার্থক্যটুকু নেই।
তোমার প্রতি আমার দুর্বলতার কথা আমি কখনও তোমাকে জানতে দিইনি। কথাই তো বলতাম না আমি। যদিও তোমার পক্ষ থেকে আলাপ জমানোর আহ্বান আসতো, তবে সে আহ্বানে আমি সাড়া দিতাম না। অথচ ভেতর থেকে সেই আহ্বানে সাড়া দিতে আমার খুব খুব ইচ্ছে হত। পারতাম না। Extreme introvert যাকে বলে, আগাগোড়া সেটিই ছিলাম সে সময়ে।
এসএসসি পরীক্ষা এসে চলেও গেল। আমি মোটামুটি রকমের ফলাফল করে বেরিয়ে এলাম বিদ্যালয়ের গণ্ডি থেকে। বাবার পরিকল্পনা ছিল, আমার কলেজ হবে চট্টগ্রামে। তাই ঢাকা ছেড়ে চট্টগ্রামে চলে আসা হলো সপরিবারে, পৈতৃক নিবাসেই। আমার শৈশব, আমার কৈশোর, এবং আমার স্কুলবন্ধুদের পেছনে ফেলে, শুধু স্মৃতিগুলো মাথায় নিয়ে আমি চলে এলাম এই চট্টগ্রামে। ভর্তি হলাম এখানেরই একটি কলেজে।
কলেজ, কোচিং, এসবের ব্যস্ততা আমাকে ঘিরে ধরলো। তাছাড়া এ সময়েই পারিবারিক আর্থিক টানাপোড়েনে পড়ে যাই। রূপার চামচ মুখে নিয়ে বড় হওয়া এই আমি তখন প্রায় সাড়ে তিন কি.মি হেঁটে পড়তে এবং পড়াতে যেতাম। এভাবেই চুকালাম এইচএসসি'র পাঠ। 
ভার্সিটিতে ভর্তি হতে পারিনি। পাবলিক ভার্সিটিতে ভর্তি হওয়ার ছিল না জ্ঞানগত যোগ্যতা। এবং প্রাইভেটে ভর্তি হওয়ার ছিল না সামর্থ্য। 
এইচএসসি পাশের বছরখানেক বাদে ফেসবুকে পেয়ে গেলাম রায়হান ভাইয়াকে। তার সাথে কথা বললাম, এবং ফিরে গেলাম সেই অতীতের একটি অধ্যায়ে। যে অধ্যায়ে শুধু আমি আর তুমি রায়হান ভাইয়ার কাছে হিসাববিজ্ঞান দীক্ষা নিতাম।
রায়হান ভাইয়া জানালেন তিনি এখন বিবাহিত, এবং আমেরিকায় প্রবাসী।
এবং আরো জানালেন, তুমি মারা গেছ।
এইচএসসি পাশের বছরখানেক বাদে ফেসবুকে পেয়ে গেলাম রায়হান ভাইয়াকে। তার সাথে কথা বললাম, এবং ফিরে গেলাম সেই অতীতের একটি অধ্যায়ে। যে অধ্যায়ে শুধু আমি আর তুমি রায়হান ভাইয়ার কাছে হিসাববিজ্ঞান দীক্ষা নিতাম।
রায়হান ভাইয়া জানালেন তিনি এখন বিবাহিত, এবং আমেরিকায় প্রবাসী।
এবং আরো জানালেন, তুমি মারা গেছ।
অ্যাপেন্ডিক্সের সমস্যায় তুমি ভুগছিলে, সেই দশম শ্রেণি থেকেই। খুব ভোগাত তোমাকে এর বিভীষিকাময় যন্ত্রণা। থেকে থেকে এই যন্ত্রণা ওঠত। সে কারণেই তুমি ক্লাসে কম আসতে। তুমি যখন ক্লাসে আসতে না, তখন আমি অস্থির হয়ে থাকতাম। অথচ সেই আমি তো জানতাম না, তুমি তোমার ঘরের একটি কক্ষের একটি নিঃসঙ্গ বিছানায় শুয়ে ব্যথার যন্ত্রণায় অস্থির হয়ে থাকতে।
তোমার পরিবার তোমার এই অ্যাপেন্ডিক্সের যন্ত্রণাটিকে পাত্তা দেয়নি। সে কারণেই একেবারে চূড়ান্ত মুহূর্তে তুমি কাউকে পাত্তা না দিয়েই চলে গিয়েছ, ঢাকা মেডিকেল কলেজের একটি স্ট্রেচারে শুয়ে শুয়েই।
রায়হান ভাইয়া জানালেন, এটা দু'বছর আগের ঘটনা। আমি থমকে গেলাম।
তোমার পরিবার তোমার এই অ্যাপেন্ডিক্সের যন্ত্রণাটিকে পাত্তা দেয়নি। সে কারণেই একেবারে চূড়ান্ত মুহূর্তে তুমি কাউকে পাত্তা না দিয়েই চলে গিয়েছ, ঢাকা মেডিকেল কলেজের একটি স্ট্রেচারে শুয়ে শুয়েই।
রায়হান ভাইয়া জানালেন, এটা দু'বছর আগের ঘটনা। আমি থমকে গেলাম।
সে মুহূর্তে আমি এক শূন্যতায় ডুবে গেলাম রুমা। আমার মনে হলো, আমি একা হয়ে পড়েছি এই পৃথিবীতে। আমি সে সময়ে বাসার ছাদে ছিলাম। আমার ইচ্ছে হচ্ছিল ছাদ থেকে নিচের সবুজে ঘেরা ধানক্ষেতটির উপরে লাফ দিতে। এবং সম্পূর্ণ নিজের অজান্তেই অন্তর্মুখী ও কাটখোট্টা স্বভাবের এই আমি ঝরঝর করে কেঁদে ফেললাম। দু'টো বছর তুমি ইতোমধ্যেই কাটিয়ে এসেছ কবরের জীবনে। আর এই পৃথিবীতে তোমার শোকেই, দু'টো বছর বাদে হলেও একটি ছেলে, যার নিবাস তোমার কবর থেকে ৩০০ কি.মি দক্ষিণে, সে তার বাসার ছাদে বসে কেঁদে ফেলেছে, এটা কি তোমার সৌভাগ্য নয়? 
রুমা, আজ থেকে চার বছর আগে তুমি মারা গিয়েছিলে। এই জানুয়ারি মাসেরই কোনো একটি দিন তুমি পরপারে পাড়ি জমিয়েছিলে।
কৈশোরে কেউ প্রেমে পড়ে না। তখন বয়ঃসন্ধির চাপে পড়ে শুধু এক দৈহিক আকর্ষণেই কিশোর-কিশোরীরা পড়ে যায়। তাদের বিবেচনাবোধের অপরিপক্বতার কারণে তারা LOVE ও ATTRACTION -এর মাঝে পার্থক্য করতে পারে না। হাল আমলের নাটক-সিনেমা-গল্পের মোহে পড়ে তারা একে LOVE হিসেবেই বিবেচনা করে নেয়। বহুদিন বাদে তারা বুঝতে পারে, সেটা ছিল ATTRACTION.
আমার ব্যাপারটি কিন্তু এই দ্বিতীয়টিই ছিল। অ্যাট্রাকশন, আকর্ষণ। তোমার মৃত্যুতে আমি কষ্ট পেয়েছি। তবে সেটা ভালোবাসাপ্রসূত নয়। বরং এক সময়কার সহপাঠীর আকস্মিক মৃত্যুসংবাদে একটি ধাক্কার বহিঃপ্রকাশ ছিল সেই কান্না, সেই আত্মহত্যার ক্ষুদ্র ইচ্ছেটুকু।
আমার ব্যাপারটি কিন্তু এই দ্বিতীয়টিই ছিল। অ্যাট্রাকশন, আকর্ষণ। তোমার মৃত্যুতে আমি কষ্ট পেয়েছি। তবে সেটা ভালোবাসাপ্রসূত নয়। বরং এক সময়কার সহপাঠীর আকস্মিক মৃত্যুসংবাদে একটি ধাক্কার বহিঃপ্রকাশ ছিল সেই কান্না, সেই আত্মহত্যার ক্ষুদ্র ইচ্ছেটুকু।
আমি চাইলে এই পত্রে তোমাকে নিয়ে অনেক ভালোবাসার কথাই বলতে পারতাম। 'তোমাকে আমি আসলেই ভালোবেসেছিলাম' - এ ধরনের তরল কথাবার্তা বলে এই পত্রের গ্রহণযোগ্যতা বাড়াতে পারতাম। তাছাড়া একটি প্রেমের করুণ পরিণতি- একটি সার্থক ট্র্যাজেডি হিসেবে এই পত্রকে পরিণয় দিতে পারতাম।
তবে আমি সেটা করছি না। আমি স্ববিরোধিতা করি না। আমি যা ভাবি; তা-ই বলি, তা-ই লিখি। আমি যদি একে 'ভালোবাসা' বলি, তাহলে কাল যখন আমার নবম শ্রেণিপড়ুয়া ছোট বোন কোনো একটা ছেলেকে পছন্দ করে নিবে, তার এই পছন্দকেও তখন 'ভালোবাসা' বলে স্বীকৃতি দেয়া লাগবে। অথচ আদতে সেটি নয়।
তবে আমি সেটা করছি না। আমি স্ববিরোধিতা করি না। আমি যা ভাবি; তা-ই বলি, তা-ই লিখি। আমি যদি একে 'ভালোবাসা' বলি, তাহলে কাল যখন আমার নবম শ্রেণিপড়ুয়া ছোট বোন কোনো একটা ছেলেকে পছন্দ করে নিবে, তার এই পছন্দকেও তখন 'ভালোবাসা' বলে স্বীকৃতি দেয়া লাগবে। অথচ আদতে সেটি নয়।
কাছে আসার যেসব তথাকথিত 'সাহসী গল্প' ছড়িয়েছিটিয়ে আছে চারিদিক, সেগুলো কতটুকু সত্য, আর কতটুকু বাস্তবসম্মত; সেটি সমাজের হাহাকারের দিকে এক নজর তাকালেই বোঝা যায়। জটিল পরিসংখ্যানে যাওয়া লাগে না। 
দশম শ্রেণিতে পড়াকালীন যদি আমি তোমায় জানাতাম, 'আমি তোমাকে পছন্দ করি'; তাহলে আমি নিশ্চিত, তুমি সেটি গ্রহণ করতে। কারণ তুমিও আমার প্রতি দুর্বল ছিলে। তোমার দুর্বলতার কথা জেনেও আমি তখন বিরত ছিলাম, নিজের সাথে যুদ্ধ করে করেই। আজ আমি তাই ভাবি, আমি সেটি ভুল করিনি।
আমি আজ একুশে এসেছি। খুবই অল্প বয়স। আমি বলবো না যে আমি এখনও কাউকে খুঁজে পাইনি। আমি খুঁজিনি, সেটির সময় আসেনি। তবে এরই মাঝে তিনটি রমণীর কাছ থেকে প্রস্তাব পেয়েছি। প্রথম দু'জন আমার কলিগ, এবং তৃতীয়জন আমার সাহিত্যের এক কিশোরী ভক্ত। আমি সাড়া দিইনি। কারণ আমি বাস্তববাদী।
যাহোক, তোমাকে এতসব কথা বলছি কেন, ঠিক জানি না। চিঠিটা তোমার কাছে যাবে না। তবে যাবে কিছু পাঠকের কাছে। এবং আমার লেখার সাথে পরিচিত পাঠকেরা একটু হলেও ভ্রু কুঁচকে নিয়েছেন, কারণ আমি এ লেখায় গোছালো ভাবটিকে ঠিক ধরে রাখতে পারছি না।
তোমায় ভালোবাসিনি হয়ত। তবে একটা সময়ে বয়সজাত দুর্বলতার মাঝে পড়েছিলাম। সে সুবাদেই আজ তোমাকে একটু স্মরণ করে নিলাম।
এই পত্রটি পড়ার পর এর পাঠকেরা মন্তব্যের ঘরে তোমার কল্যাণের জন্যে দু'আ করে যাবে সেই মহান স্রষ্টার কাছে। তাঁরা বলবেন, "আল্লাহ তাঁকে জান্নাত নসীব করুন, ক্ষমা করুন।" আর আমি এপাশ থেকে 'আমিন' বলে যাব। কিন্তু এছাড়া আমার করার আর কিছুই থাকবে না।
এই পত্রটি পড়ার পর এর পাঠকেরা মন্তব্যের ঘরে তোমার কল্যাণের জন্যে দু'আ করে যাবে সেই মহান স্রষ্টার কাছে। তাঁরা বলবেন, "আল্লাহ তাঁকে জান্নাত নসীব করুন, ক্ষমা করুন।" আর আমি এপাশ থেকে 'আমিন' বলে যাব। কিন্তু এছাড়া আমার করার আর কিছুই থাকবে না।
আমি আজ গল্পকার হয়েছি। বেশ কয়েকটি জায়গায় লেখালেখি করি। চারিদিকে খুঁজে ফিরি গল্পের প্লট। আজ এই পত্রসাহিত্যের টপিক হিসেবে তোমাকে বেছে নিয়েছি। আমার এই স্বার্থপর মনোভাবের জন্যে আমি তোমার কাছে ক্ষমা চাইছি। লেখকমাত্রই স্বার্থপর হয়।
শেষটা সুন্দর করতে পারছি না। মাথাটা কাজ করছে না। আজ মনটাও খানিকটা বিক্ষিপ্ত। তাই আজ এটুকুই থাকুক। কাল যদি মনটা খোলামেলা থাকে, তাহলে হয়ত আরো কিছু লেখার চিন্তাভাবনা করবো।
ইতি,
তানসীর।
ইতি,
তানসীর।
Post a Comment