মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় একটি লেখায় বলেছিলেন, “সত্যই তো আর পুতুল নয় মানুষ। অদৃশ্য শক্তি বা অন্য অন্য মানুষের আঙ্গুলে বাঁধা সুতোর টানে সত্যই তো মানুষ পুতুলের মত নাচে না।”
কিন্তু তিনি যখন 'পুতুল নাচের ইতিকথা ' উপন্যাসটি লিখলেন, তখন প্রশ্ন আসতেই পারে এই পুতুলের অদৃশ্য দড়ি কার হাতে? এর উত্তর পেতে হলে পাঠকদের উপন্যাসটির প্রধান চরিত্র শশী এবং আবর্তনে থাকা গাওদিয়ার সাধারণ মানুষের সাদামাটা জীবনযাত্রার গভীরতাকে গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করতে হবে। তাহলেই পাঠক বুঝতে পারবেন, লেখকের মতে সেই অদৃশ্য দড়ি কোন অদৃশ্য শক্তির কাছে বাঁধা পড়ে নেই। বাঁধা পড়ে আছে মানুষের নিজের হাতেই।
জীবনানন্দের ‘আট বছর আগের একদিন’ কবিতাটি পড়ে যে বিপন্ন বিস্ময়ের বোধ আমার মনের মাঝে মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছিল, এই বইটাও ঠিক তেমন অনুভূতিই জাগিয়েছে। নিজেদের জীবনে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলোর উপর যখন আমরা নিয়ন্ত্রণ হারাই, তখন মনে হয় আমরা পুতুলই বৈকি। অজানা কোন এক সুতোর টানে নেচে যাই, অভিনয় করে যাই জীবনের মঞ্চে।
অদ্ভুত রঙ্গমঞ্চ আমাদের এ জীবন। এই জগতে প্রতিটি মানুষের স্বতন্ত্র জীবনবৈচিত্র্য, নরনারীর এক অমোঘ আকর্ষণ, যুগ যুগ ধরে টিকে থাকা ভুয়োদর্শনের উপর অন্ধবিশ্বাস, সার্থক জীবনের নামে এক মরীচিকার পিছে ছুটে চলা- এসব মিলিয়ে ফুলে-ফেঁপে ওঠা জীবনকে সঙ্গী করে আমাদের বেঁচে থাকা।
বইটিতে মানিক বন্দোপাধ্যায় এক গ্রাম্য যাপিত জীবনের গল্প বলেছেন। আপাতদৃষ্টিতে যে জীবনকে বৈচিত্র্যহীন, সংকীর্ণ ও স্বকেন্দ্রিক বলে ভুল হয়। কিন্তু মানিক দেখিয়েছেন, এ জীবনের মাঝেও আছে কত বৈচিত্র্য, কত রহস্য, ছোট-বড় ঘটনাপ্রবাহের কত বিশাল প্রভাব সেখানকার মানুষগুলোর জীবনে। তারা বাস করে এক ঘোর লাগা জীবনে। সেখানে নিজেদের জীবন কেউ নিজের মত করে পালটে দিতে পারে না। মনে হতে থাকে, তারা যেন নিজেদের সৃষ্ট সুতোর জালে নিজেরাই আটকে পড়ে অনেকটা পুতুলের মত নেচে যায় তারা অদৃশ্য কোনো শক্তির দ্বারা প্রভাবিত হয়ে।
উপন্যাসের প্রধান চরিত্র শশী নিজের সাথেই দ্বন্দ্বযুদ্ধে জড়িয়ে পড়া পরাজিত এক সত্তা।হৃদয়, আবেগের বশবর্তী হয়েও সে চায় যুক্তি দ্বারা জীবন চালিয়ে যেতে। তাই সে বারবার নিজের কাছে নিজেই পরাজিত হয়।

গল্পের নায়িকা কুসুম শশীকে ভালোবাসে। সামাজিক বিধি-নিষেধের তোয়াক্কা না করেও শশীকে প্রেম নিবেদন করে নানা উপায়ে। কিন্তু শশীর বিক্ষিপ্ত মনের অস্থিরতা তার অনুভূভুতিগুলোকে অবহেলা করে। মৃত্যু ঘটে কুসুমের হৃদয়ের। প্রকৃতপক্ষে মানবসৃষ্ট এই সংকীর্ণ সমাজে আমরা অনেকেই শশীর মতই বেঁচে থাকি। নিজের আবেগকে জোর করে অবদমন করি 'সামাজিকতা' নামক এক দুর্ভেদ্য যুক্তির জালে জড়িয়ে।
ঘোর লাগিয়েছে কুমুদের বোহেমিয়ান জীবনধারা। অনর্থক চাওয়া-পাওয়ার জালে আটকে পড়া এ জীবনকে এক চমৎকার অর্থহীনতায় জড়িয়ে ফেলেছে সে। প্রত্যাশার পাহাড় অবহেলা করে বেঁচে থাকাকে রূপ দিয়েছে এক গতিশীল কাব্যে, এক ছন্নছাড়া জাদুবাস্তবতায়। জীবন মানে তার কাছে শুধু কোনো কিছুর মোহে ছুটে বেড়ানো নয়, বরং নির্মোহ এক প্রত্যাশায় জীবনকেই ছুটিয়ে বেড়ানো।
যাদবের ঘটনার মধ্য দিয়ে মানিক আমাদের জানিয়ে গেছেন সত্যের মোড়কে ঢাকা এক ভয়াবহ মিথ্যের গল্প। সাধারণ মানুষের বিশ্বাসকে পুঁজি করে উঁচু আসনে অধিষ্ঠিত থাকবার আশায় স্বেচ্ছামৃত্যু বরণ করে ধন্বন্তরি পুরুষ!
গোপালের চরিত্র আমাদের দেখিয়েছে ভয়াবহ স্বার্থপর ও আত্মকেন্দ্রিক এক মানুষের জীবনযাত্রাকে। যারা সুখ খোঁজে অর্থ-সম্পদে,ক্ষমতার প্রকাশে। আর চায় এসবের মাঝেই তাদের অস্তিত্বকে অমর করতে।
নানান বিচিত্র চরিত্রের জীবনধারার মাঝে আরো আছে মতির মত অপরিণত, আবেগী নারীর গল্পকথা, পরাণের মত উত্তাপহীন জীবনমুখী চরিত্র, আরো আছে ভালোবাসার ভুল মায়ায় জড়ানো জয়ার জীবনকাহিনীও।
জীবনের নানা বিচিত্র ভাবপ্রবণতা, নানা শ্রেণী ও সমাজের ভিন্ন ভিন্ন চরিত্রের গল্পগাঁথা, যুক্তি দিয়ে জীবন চালাতে গিয়ে হৃদয়ের মৃত্যু, এসবই মানিক ঔপন্যাসিকসুলভ দক্ষতার সাথে ফুটিয়ে তুলেছেন তাঁর এই কালজয়ী উপন্যাসে। পৃথিবীর অন্য কোথাও হয়ত বা অন্য প্রেক্ষাপটেই মঞ্চস্থ হয় এই নাটক। কুশীলব আলাদা হলেও যার ঘটনার প্রবাহ একইদিকে।
এই বই মনের এক কোণে কেন যেন একটা হাহাকারের সুর বাজিয়ে দেয়। আসলেই কি আমরা তাহলে পুতুল? নিয়তির অদৃশ্য শক্তির দ্বারা চালিত এক অনিবার্য স্রোতের টানে ভেসে চলেছি?নাকি আমাদের ভয়,জীবন সম্পর্কে অজ্ঞতা,বিকাশের পথে নিজেদেরই সৃষ্ট অন্তরায় এসবই আমাদের পুতুল বানিয়ে নাচাচ্ছে? সমাজ,সংসার সব কি আসলেই মিছে? জীবনের ভার বয়ে নিরন্তর শুধু শুন্যতার দিকেই ছুটে চলা? নাকি ক্ষুদ্র এ জীবনকে নিজের মত করে স্বার্থপর বানিয়ে বেঁচে থাকা?
হলিউড সিনেমা Forrest Gump-এর শেষ দৃশ্যের কথাগুলো মাথায় গেঁথে যায় শেষমেশ।
“May be we each have a destiny or if we are all just floating around accidental like on a breeze. Maybe both happening at the same time!”
হয়ত বা জীবন মানেই এভাবে বিচিত্র ভাবে, খাপছাড়া ভাবে বেঁচে থাকা। জীবনকে শ্রদ্ধা করে তাকে আনন্দময় করে তুলে সবার সাথে যুক্ত হয়ে,বাঁচার মত করে বেঁচে থাকা। এটাই হয়তো আমাদের জীবন নামের পুতুল নাচের ইতিকথা।
পছন্দের উক্তিসমূহ
“মিথ্যারও হয়তোবা মহত্ত্ব আছে। হাজার হাজার মানুষকে পাগল করে দিতে পারে মিথ্যার মোহ। চিরকালের জন্য সত্য হয়েও থাকতে পারে মিথ্যা।"
'সংসারে মানুষ চায় এক আর হয় আর এক, চিরকাল এমনই দেখে আসছি ডাক্তারবাবু। পুতুল বই তো নই আমরা একজন আড়ালে বসে খেলাচ্ছেন।"
"মেয়েমানুষ এরকম হয়, ওরকম হয়, শুধু মনের মত হয় না।"
"শরীর! শরীর! তোমার মন নেই কুসুম!"
পাঠে তৃপ্ত হবেন, এই নিশ্চয়তা দিতে পারি।
কিন্তু তিনি যখন 'পুতুল নাচের ইতিকথা ' উপন্যাসটি লিখলেন, তখন প্রশ্ন আসতেই পারে এই পুতুলের অদৃশ্য দড়ি কার হাতে? এর উত্তর পেতে হলে পাঠকদের উপন্যাসটির প্রধান চরিত্র শশী এবং আবর্তনে থাকা গাওদিয়ার সাধারণ মানুষের সাদামাটা জীবনযাত্রার গভীরতাকে গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করতে হবে। তাহলেই পাঠক বুঝতে পারবেন, লেখকের মতে সেই অদৃশ্য দড়ি কোন অদৃশ্য শক্তির কাছে বাঁধা পড়ে নেই। বাঁধা পড়ে আছে মানুষের নিজের হাতেই।
জীবনানন্দের ‘আট বছর আগের একদিন’ কবিতাটি পড়ে যে বিপন্ন বিস্ময়ের বোধ আমার মনের মাঝে মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছিল, এই বইটাও ঠিক তেমন অনুভূতিই জাগিয়েছে। নিজেদের জীবনে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলোর উপর যখন আমরা নিয়ন্ত্রণ হারাই, তখন মনে হয় আমরা পুতুলই বৈকি। অজানা কোন এক সুতোর টানে নেচে যাই, অভিনয় করে যাই জীবনের মঞ্চে।
অদ্ভুত রঙ্গমঞ্চ আমাদের এ জীবন। এই জগতে প্রতিটি মানুষের স্বতন্ত্র জীবনবৈচিত্র্য, নরনারীর এক অমোঘ আকর্ষণ, যুগ যুগ ধরে টিকে থাকা ভুয়োদর্শনের উপর অন্ধবিশ্বাস, সার্থক জীবনের নামে এক মরীচিকার পিছে ছুটে চলা- এসব মিলিয়ে ফুলে-ফেঁপে ওঠা জীবনকে সঙ্গী করে আমাদের বেঁচে থাকা।
বইটিতে মানিক বন্দোপাধ্যায় এক গ্রাম্য যাপিত জীবনের গল্প বলেছেন। আপাতদৃষ্টিতে যে জীবনকে বৈচিত্র্যহীন, সংকীর্ণ ও স্বকেন্দ্রিক বলে ভুল হয়। কিন্তু মানিক দেখিয়েছেন, এ জীবনের মাঝেও আছে কত বৈচিত্র্য, কত রহস্য, ছোট-বড় ঘটনাপ্রবাহের কত বিশাল প্রভাব সেখানকার মানুষগুলোর জীবনে। তারা বাস করে এক ঘোর লাগা জীবনে। সেখানে নিজেদের জীবন কেউ নিজের মত করে পালটে দিতে পারে না। মনে হতে থাকে, তারা যেন নিজেদের সৃষ্ট সুতোর জালে নিজেরাই আটকে পড়ে অনেকটা পুতুলের মত নেচে যায় তারা অদৃশ্য কোনো শক্তির দ্বারা প্রভাবিত হয়ে।
উপন্যাসের প্রধান চরিত্র শশী নিজের সাথেই দ্বন্দ্বযুদ্ধে জড়িয়ে পড়া পরাজিত এক সত্তা।হৃদয়, আবেগের বশবর্তী হয়েও সে চায় যুক্তি দ্বারা জীবন চালিয়ে যেতে। তাই সে বারবার নিজের কাছে নিজেই পরাজিত হয়।
গল্পের নায়িকা কুসুম শশীকে ভালোবাসে। সামাজিক বিধি-নিষেধের তোয়াক্কা না করেও শশীকে প্রেম নিবেদন করে নানা উপায়ে। কিন্তু শশীর বিক্ষিপ্ত মনের অস্থিরতা তার অনুভূভুতিগুলোকে অবহেলা করে। মৃত্যু ঘটে কুসুমের হৃদয়ের। প্রকৃতপক্ষে মানবসৃষ্ট এই সংকীর্ণ সমাজে আমরা অনেকেই শশীর মতই বেঁচে থাকি। নিজের আবেগকে জোর করে অবদমন করি 'সামাজিকতা' নামক এক দুর্ভেদ্য যুক্তির জালে জড়িয়ে।
ঘোর লাগিয়েছে কুমুদের বোহেমিয়ান জীবনধারা। অনর্থক চাওয়া-পাওয়ার জালে আটকে পড়া এ জীবনকে এক চমৎকার অর্থহীনতায় জড়িয়ে ফেলেছে সে। প্রত্যাশার পাহাড় অবহেলা করে বেঁচে থাকাকে রূপ দিয়েছে এক গতিশীল কাব্যে, এক ছন্নছাড়া জাদুবাস্তবতায়। জীবন মানে তার কাছে শুধু কোনো কিছুর মোহে ছুটে বেড়ানো নয়, বরং নির্মোহ এক প্রত্যাশায় জীবনকেই ছুটিয়ে বেড়ানো।
যাদবের ঘটনার মধ্য দিয়ে মানিক আমাদের জানিয়ে গেছেন সত্যের মোড়কে ঢাকা এক ভয়াবহ মিথ্যের গল্প। সাধারণ মানুষের বিশ্বাসকে পুঁজি করে উঁচু আসনে অধিষ্ঠিত থাকবার আশায় স্বেচ্ছামৃত্যু বরণ করে ধন্বন্তরি পুরুষ!
গোপালের চরিত্র আমাদের দেখিয়েছে ভয়াবহ স্বার্থপর ও আত্মকেন্দ্রিক এক মানুষের জীবনযাত্রাকে। যারা সুখ খোঁজে অর্থ-সম্পদে,ক্ষমতার প্রকাশে। আর চায় এসবের মাঝেই তাদের অস্তিত্বকে অমর করতে।
নানান বিচিত্র চরিত্রের জীবনধারার মাঝে আরো আছে মতির মত অপরিণত, আবেগী নারীর গল্পকথা, পরাণের মত উত্তাপহীন জীবনমুখী চরিত্র, আরো আছে ভালোবাসার ভুল মায়ায় জড়ানো জয়ার জীবনকাহিনীও।
জীবনের নানা বিচিত্র ভাবপ্রবণতা, নানা শ্রেণী ও সমাজের ভিন্ন ভিন্ন চরিত্রের গল্পগাঁথা, যুক্তি দিয়ে জীবন চালাতে গিয়ে হৃদয়ের মৃত্যু, এসবই মানিক ঔপন্যাসিকসুলভ দক্ষতার সাথে ফুটিয়ে তুলেছেন তাঁর এই কালজয়ী উপন্যাসে। পৃথিবীর অন্য কোথাও হয়ত বা অন্য প্রেক্ষাপটেই মঞ্চস্থ হয় এই নাটক। কুশীলব আলাদা হলেও যার ঘটনার প্রবাহ একইদিকে।
এই বই মনের এক কোণে কেন যেন একটা হাহাকারের সুর বাজিয়ে দেয়। আসলেই কি আমরা তাহলে পুতুল? নিয়তির অদৃশ্য শক্তির দ্বারা চালিত এক অনিবার্য স্রোতের টানে ভেসে চলেছি?নাকি আমাদের ভয়,জীবন সম্পর্কে অজ্ঞতা,বিকাশের পথে নিজেদেরই সৃষ্ট অন্তরায় এসবই আমাদের পুতুল বানিয়ে নাচাচ্ছে? সমাজ,সংসার সব কি আসলেই মিছে? জীবনের ভার বয়ে নিরন্তর শুধু শুন্যতার দিকেই ছুটে চলা? নাকি ক্ষুদ্র এ জীবনকে নিজের মত করে স্বার্থপর বানিয়ে বেঁচে থাকা?
হলিউড সিনেমা Forrest Gump-এর শেষ দৃশ্যের কথাগুলো মাথায় গেঁথে যায় শেষমেশ।
“May be we each have a destiny or if we are all just floating around accidental like on a breeze. Maybe both happening at the same time!”
হয়ত বা জীবন মানেই এভাবে বিচিত্র ভাবে, খাপছাড়া ভাবে বেঁচে থাকা। জীবনকে শ্রদ্ধা করে তাকে আনন্দময় করে তুলে সবার সাথে যুক্ত হয়ে,বাঁচার মত করে বেঁচে থাকা। এটাই হয়তো আমাদের জীবন নামের পুতুল নাচের ইতিকথা।
পছন্দের উক্তিসমূহ
“মিথ্যারও হয়তোবা মহত্ত্ব আছে। হাজার হাজার মানুষকে পাগল করে দিতে পারে মিথ্যার মোহ। চিরকালের জন্য সত্য হয়েও থাকতে পারে মিথ্যা।"
'সংসারে মানুষ চায় এক আর হয় আর এক, চিরকাল এমনই দেখে আসছি ডাক্তারবাবু। পুতুল বই তো নই আমরা একজন আড়ালে বসে খেলাচ্ছেন।"
"মেয়েমানুষ এরকম হয়, ওরকম হয়, শুধু মনের মত হয় না।"
"শরীর! শরীর! তোমার মন নেই কুসুম!"
পাঠে তৃপ্ত হবেন, এই নিশ্চয়তা দিতে পারি।
Post a Comment